ডায়াবেটিস পরীক্ষার ছবি
বিশ্বজুড়ে ৮০ কোটির বেশি প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। আগের হিসাবের তুলনায় যা প্রায় দ্বিগুণ। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ৩০ বছর বয়সী রোগীদের অর্ধেকের বেশি চিকিৎসা নিচ্ছেন না। নতুন এক গবেষণা প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
ল্যানসেট সাময়িকীতে প্রকাশিত ওই গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২২ সালে বিশ্বজুড়ে ১৮ কিংবা তার বেশি বয়সীদের মধ্যে প্রায় ৮২ কোটি ৮০ লাখ ডায়াবেটিক রোগী শনাক্ত হয়েছে। তাঁরা ডায়াবেটিসের টাইপ-১ কিংবা টাইপ-২ ধরনে আক্রান্ত।
ডায়াবেটিস হলো রক্তের শর্করার সঙ্গে সম্পর্কিত একটি দীর্ঘস্থায়ী বিপাকীয় রোগ। এ রোগের চিকিৎসা না নেওয়া হলে হৃৎপিণ্ড, রক্তনালি, স্নায়ু ও অন্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ক্ষতি হতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আগের এক হিসাব অনুযায়ী, বিশ্বে ডায়াবেটিকে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল প্রায় ৪২ কোটি ২০ লাখ।
গবেষণায় দেখা যায়, ১৯৯০ সাল থেকে বিশ্বে ডায়াবেটিসের হার ৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৪ শতাংশ হয়েছে। নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে আক্রান্তের হার বাড়ার প্রবণতা বেশি দেখা গেছে।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আক্রান্তের হার বাড়লেও ওই সব অঞ্চলে চিকিৎসা নেওয়ার হার তেমন একটা বাড়েনি। তবে কিছু উচ্চ আয়ের দেশে অবস্থার উন্নতি হতে দেখা গেছে।
এনসিডি রিস্ক ফ্যাক্টর কোলাবোরেশন এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যৌথভাবে গবেষণাটি করেছে। এটি প্রথম কোনো বৈশ্বিক বিশ্লেষণ, যেখানে সব দেশের আক্রান্তের হার এবং চিকিৎসাসংক্রান্ত বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এক হাজারের বেশি গবেষণার ওপর ভিত্তি করে নতুন গবেষণাটি করা হয়েছে। ওই এক হাজারের বেশি গবেষণায় কোনো না কোনোভাবে ১৪ কোটির বেশি মানুষ জড়িত ছিলেন।
সাধারণত হাই ফাস্টিং প্লাজমা গ্লুকোজের মাত্রা ও হাই গ্লাইকেটেড হিমোগ্লোবিন—এ দুই পরীক্ষার মধ্য দিয়ে ডায়াবেটিস শনাক্ত করা হয়ে থাকে। ডায়াবেটিস আক্রান্তের জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ নির্ধারণেও এ পরীক্ষাগুলো করা হয়।
গবেষকেরা বলছেন, বিশ্বের কিছু অংশে, বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের যেখানে শুধু ফাস্টিং প্লাজমা গ্লুকোজ ব্যবহার করা হয়, সেখানে অনেক সময় রোগ নির্ণয় হয় না। এসব ক্ষেত্রে নির্ভুলভাবে রোগ শনাক্তে এ দুটি পরীক্ষাই জরুরি বলে উল্লেখ করেছেন গবেষকেরা।
তবে গবেষণা প্রতিবেদনটিতে টাইপ-১ ও টাইপ-২ ধরনের মধ্যে পার্থক্য কী, তা উল্লেখ করা হয়নি। এর আগের গবেষণায় পাওয়া তথ্য থেকে ইঙ্গিত মেলে যে প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিদের বেশির ভাগই টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। এটি স্থূলতা ও অস্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণের সঙ্গে সম্পর্কিত।