চুরির অভিযোগে ঝুলিয়ে মারধর, রিকশাচালকের মৃত্যু।

ছবি : সংগৃহীত।

চুরির অভিযোগে হাসানুর রহমান নামে এক রিকশা-চালককে ঝুলিয়ে মারধর করায়‌ লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলায়। ৫দিন পর তার মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে শনিবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে নিজ বাড়িতে আহত অবস্থায় মারা যান তিনি।

ব্যাটারি চুরির অভিযোগে গত ১১ নভেম্বর তাকে বেধড়ক মারধর করা হয়। হাসানুর পাটগ্রাম পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মির্জারকোট এলাকার মৃত আশরাফ আলীর ছেলে। তিনি পেশায় রিকশা-চালক ছিলেন।

গত ১১ নভেম্বর স্থানীয় ও নিহতের স্বজনরা জানান বিকেলে পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ইউনুস আলীর ঠাকুরবাড়ি এলাকার বাসার একটি আইপিএসের ব্যাটারি হাসানুরের রিকশায় পাওয়া যায়। এতে ব্যাটারি চুরি করেছে বলে তাকে আটক করে বেধড়ক মারধর করে ইউনুস আলীর ছেলে ও স্বজনরা। খবর পেয়ে হাসানুরের স্ত্রী বিলকিস বেগম (২৫) স্বামীকে ছাড়িয়ে নিতে গেলে তাকেও পায়ে রশি বেঁধে ঝুলিয়ে মারধর করা হয়। গুরুত্বর আহত অবস্থায় হাসানুরকে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে নিয়ে যায় তার স্ত্রী। পাঁচদিন পর আজ আহত হাসানুর মারা গেছে।

হাসানুরের ছোট ভাইয়ের স্ত্রী শাহানাজ পারভীন বলেন, আমার ভাসুর নাকি আইপিএসের ব্যাটারি বের করে গাড়িতে তুলেছে। স্থানীয়রাসহ ওই বাড়ির লোকজনরা মারধর করেছে তাকে। হাসানুরের বুকের হাড় ভেঙে গেছে। মানুষের কাছে শুনে ওনার স্ত্রী ছুটে গেলে তাকেও মারধর করেছে। লোকজনের পায়ে-হাতে ধরে হাসানুরকে নিয়ে আসে। আমি ভাসুর হত্যার বিচার চাই।

হাসানুরের ছোট ভাই আনিসুর রহমান বলেন, আমার ভাই ঠাকুরবাড়িতে ভাড়া নিয়ে গেছে। কে বা কারা তার রিকশায় ব্যাটারি উঠিয়ে দিয়েছে। নিয়ে আসার সময় ব্যাটারি চুরির সন্দেহে কাদের ও তার ভাই (ইউনুসের ছেলে) এবং স্থানীয় লোকজন ধরে পায়ে রশি বেঁধে ঝুলিয়ে মারধর করে। আজ আমার ভাই মারা গেছে।

জানতে চাইলে ইউনুস আলীর ছেলে ফারুক হোসেন বলেন, আমরা কেউ তাকে মারধর করিনি। বাসা থেকে ব্যাটারি, আইপিএস চুরি করে নিয়ে যাওয়ার সময় পাড়ার লোকজন চিৎকার করে তাকে ধরে চড়-থাপ্পড় দিয়েছে। ঘটনাস্থলে তার স্ত্রীও আসে। পাড়ার লোকজন পুলিশকে দিতে চেয়েছিল। আমরা ধমক দিয়ে হাসানুরের স্ত্রীর হাতে তুলে দিয়েছি।

পাটগ্রাম থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) পিএম মামুনুর রশিদ বলেন, এ ব্যাপারে থানায় কেউ জানায়নি। নিজেরা ঘটনা জেনেছি। নিহতের স্বজনরা না কি মীমাংসা করবে, আইনি ব্যবস্থা নেবে না। আমি বলেছি, আপনারা যাই করেন না কেন লাশ ময়নাতদন্ত করা হবে। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন আছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *